প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের এখন ‘চোর’ বলা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের এখন ‘চোর’ বলা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

 

মির্জা ফখরুল Secret show

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে এখন কারও আগ্রহ নেই। নির্বাচন কমিশন নিয়ে মানুষের শ্রদ্ধা নেই, আস্থা নেই। প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে তারা চুরি করছে, তারপরও লজ্জাহীন, শরমহীন নির্বাচন কমিশন পদত্যাগ না করে সেটাকে ‘ডিফেন্ড’ করছে। এর চেয়ে কলঙ্কময় অধ্যায় আর হতে পারে না।

আজ শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তাঁর কমিশনারদের বলা হচ্ছে, তাঁরা চোর। তাঁরা বক্তৃতার নামে, গাড়ি চড়ার নামে টাকা চুরি করছেন। বেআইনিভাবে গাড়ি নিয়েছেন, এ নিয়ে কথা বলার আগ্রহ নেই।

এরপরও বিএনপি কেন নির্বাচনে যাচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনে যাচ্ছি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য। আমাদের একটা কৌশল আছে। কৌশল অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিই। এখন সেই কৌশল থেকেই আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি। আমরা এ সুযোগে জনগণের কাছে যেতে পারছি। অন্য সময়ে আমাদের সেই সুযোগটাও দেওয়া হয় না।’


২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করছি। দেশের জনগণসহ সারা বিশ্বের মানুষ জানেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদের যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, তা ২৯ ডিসেম্বর রাতেই হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সব ভোট ডাকাতি করে নিয়ে গেছে সেদিন। তারা জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাদের যে লক্ষ্য একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, তারা সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে।’

করোনার টিকার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের চিরাচরিত অভ্যাস সবখানে দুর্নীতি করা, চুরি করা। করোনার টিকার ক্ষেত্রেও তারা সেই মোহ ছাড়তে পারছে না। করোনা শুরুর দিকে স্বাস্থ্য বিভাগকে দিয়ে দুর্নীতি করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষা করতে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল, তা মন্ত্রী বা সচিবের সামনেই হয়েছিল। সেই দুর্নীতির ঘটনায় রিজেন্টের মালিক সাজা পাচ্ছেন। কিন্তু সেই চুক্তির জন্য মন্ত্রী বা সচিবকে জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি। আসলে সরকারের মধ্যে যখন কোনো জবাবদিহি থাকে না, পার্লামেন্টে যখন দুর্নীতির জন্য কাউকে কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা যায় না, তখন তো সেই দেশে এটাই স্বাভাবিক।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘পৃথিবীর মানুষ যখন করোনার টিকা কীভাবে বণ্টন করবে, কত পয়সা লাগবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা করছে; একটা রোডম্যাপ দিলেও সরকার টিকার জন্য কত খরচ হবে, তা স্পষ্ট করে বলেনি। পত্রপত্রিকায় দেখা যাচ্ছে, ৩ দশমিক ২২ ডলারে ভারত টিকা কিনছে। আর ভারতের কাছ থেকে আমাদের ৫ ডলারের ওপরে কিনতে হবে। এই টাকাটা যাবে জনগণের ট্যাক্স থেকে। এই যে প্রতি টিকায় প্রায় এক দশমিক ৭ থেকে ৮ ডলার বেশি দিতে হচ্ছে, যদিও বলা হচ্ছে এটা বিনা পয়সায় দেওয়া, তবু ফাইনালি জনগণের ট্যাক্সের পয়সা থেকে। এটাও দুর্নীতির একটা বড় ক্ষেত্র।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আরও উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আমীন, সহসভাপতি সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তারিক আদনান প্রমুখ।

Sutro-Prothom alo

Post a Comment

0 Comments